শিরোনাম |
বায়োগ্যাস
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() বায়োগ্যাস বায়োগ্যাস মূলত জৈব বর্জ্য, বিশেষ করে গবাদি পশুর গোবর, রান্নাঘরের উচ্ছিষ্ট ও কৃষিজ অবশিষ্টাংশ থেকে উৎপন্ন হয়। উৎপাদনের সময় অক্সিজেনবিহীন পরিবেশে মাইক্রোবায়াল সক্রিয়তায় নির্গত হয় মিথেন গ্যাস, যা এক ধরনের শক্তি। এই শক্তিকেই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গোবর, পশুপাখি ও মানুষের বর্জ্য, আবর্জনা, কচুরিপানাসহ যেকোনো ধরনের পচনশীল জৈব পদার্থও বায়োগ্যাসের কাঁচামাল। এই গ্যাসে ৫৫ থেকে ৬৫ শতাংশ মিথেন ও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড থাকে। এ ছাড়া থাকে নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন সালফাইড। বায়োগ্যাস ব্যবহারের ফলে কোনো ধরনের গন্ধ ও ধোঁয়া সৃষ্টি হয় না। বায়োগ্যাসে ব্যবহৃত অবশিষ্ট কাঁচামাল জৈব সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা যায়। এই সার মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং রাসায়নিক সার ব্যবহারের ওপর নির্ভরতা কমায়। জৈব সার মাছের খাদ্য হিসেবে পুকুরেও ব্যবহার করা যায়। একটি ছোট আকারের বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। ২০১১ সালে সারা দেশে ৪২ হাজারের মতো বায়োগ্যাস প্লান্ট ছিল। ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয় ৬০ হাজার। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ৭৬ হাজারে পৌঁছে। বর্তমানে সংখ্যাটি এক লাখের ওপরে। পরিবেশগত দিক থেকে বায়োগ্যাস একটি টেকসই জ্বালানি। এটি কাঠ বা কয়লার মতো প্রচলিত জ্বালানির বিকল্প হওয়ায় বনাঞ্চল সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে এবং কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়ক হয়। এ ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতি ঘটায় এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস করে। বাংলাদেশে বায়োগ্যাস প্লান্টের সংখ্যা বাড়লেও হতাশার কথা হচ্ছে, এর বিস্তার আশানুরূপ নয়। প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে প্লান্ট স্থাপনের উচ্চ প্রাথমিক খরচ, প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব ও সচেতনতার সংকট। অনেক সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষ বায়োগ্যাস প্লান্টের রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ পায় না। ফলে প্লান্ট নষ্ট হয়ে পড়ে। তবে আশার কথা, বায়োগ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন করে পরিকল্পনা করছে সরকার। ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে বায়োগ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। |