বুধবার ২১ মে ২০২৫ ২৩:০৫:৩৭ পিএম
শিরোনাম নারী সংস্থার কমিশনের মেয়াদ বাড়ল       এনসিপি-বিএনপি দ্বন্দ্ব-বাগযুদ্ধ, নীরব দর্শক জামায়াত       লিটারে তেলের দাম ৩৫ টাকা বাড়াল টিসিবি       এবার রাজপথে নামার ঘোষণা দিলেন ইশরাক       মায়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ : প্রেস উইং       ‘আওয়ামী লীগের দোসর ধরিয়ে দেওয়ার নামে মব সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না’       তাপসের টাকা খেয়ে ইসিতে বিক্ষোভ করছে একটি দল : ইশরাক      
বঙ্গোপসাগরে মধ্যরাত থেকে ৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক :
Published : Monday, 14 April, 2025
বঙ্গোপসাগরে মধ্যরাত থেকে ৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু
দেশের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সরকার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও গ্রীষ্মকালীন এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে ১৪ এপ্রিল দিবাগত রাত থেকে এবং তা চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত। এ সময় সামুদ্রিক মাছ বিশেষ করে ইলিশের প্রজননকাল হওয়ায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে মৎস্য বিজ্ঞানীরা সময়োপযোগী ও প্রজনন সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।

এই সময়কালটা মাছের জন্য সবচেয়ে সংবেদনশীল। কারণ, গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ইলিশসহ বহু সামুদ্রিক মাছ উপকূলবর্তী অঞ্চলে এসে ডিম ছাড়ে। এই সময়ে ব্যাপকহারে মাছ ধরলে তাদের প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং পরবর্তী মৌসুমে মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। ২০১৫ সাল থেকে সরকার এই বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর গ্রীষ্মকালীন নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে এবং প্রতিবছর তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।


পটুয়াখালীর মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “এই নিষেধাজ্ঞা না দিলে সামুদ্রিক মাছের প্রাকৃতিক বংশবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়ত।” তিনি আরও জানান, ভারতের সঙ্গে মিল রেখে এই সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে পুরো বঙ্গোপসাগরে একটি বৃহৎ মৎস্য অভয়ারণ্য সৃষ্টি হয়। তবে বাস্তবতার কথা বলতে গেলে, অনেক উপকূলবাসী ও জেলেদের কষ্টও বেড়ে যায়। একজন স্থানীয় জেলে আক্ষেপ করে বলেন, “চাল দেওয়ার কথা বললেও সময়মতো পাই না, আবার যারা পায় তারা অনেকেই প্রকৃত জেলে না।”

মৎস্যজীবী সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সহায়তার তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি রয়েছে। অনেক প্রকৃত জেলে সরকারি সহায়তা পান না, অথচ রাজনৈতিক প্রভাবশালী বা অন্য পেশার মানুষদের নাম তালিকায় চলে আসে। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, একদিকে যেমন সাগর বিশ্রামে যাচ্ছে, তেমনি উপকূলবাসীর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনও কিছুটা আরামের অধিকার রাখে। এ জন্য নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি সহায়তা যথাযথভাবে পৌঁছানো, সঠিক তালিকাভুক্তি এবং বিকল্প আয়ের উৎস তৈরি করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রজননকালে মাছ ধরা বন্ধ রাখলে পরবর্তী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু পরিবেশ সংরক্ষণ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক। এবারের মতো ভারতের ক্ষেত্রেও একই সময়সীমায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় এটি সমুদ্র সংরক্ষণের একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আগামী দিনের জন্য সুসংবাদ বয়ে আনতে পারে।

 


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com