মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০৪:০৩ এএম
শিরোনাম আমলযোগ্য অপরাধের ঘটনায় অবশ্যই মামলা নিতে হবে : ডিএমপি কমিশনার       নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য খুব বেশী নয়: নজরুল ইসলাম       কাতারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা       বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু সহিষ্ণু অর্থনীতি গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা       ১১ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার       পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক       এমপি-মন্ত্রীসহ পলাতক সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে: প্রেস সচিব      
রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ নিয়ে পুরো পৃথিবী টালমাটাল!
তৌফিকুল ইসলাম পিয়াস
Published : Monday, 7 April, 2025
রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ নিয়ে পুরো পৃথিবী টালমাটাল!

রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ নিয়ে পুরো পৃথিবী টালমাটাল!

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি বড় নাড়া দিয়েছেন পৃথিবীটাকে, মানে আমাদের এই গ্রহটিকে।
আমার মনে হয় এই নাড়াটার একটা প্রয়োজন ছিলো। নাড়াটা না দিলে আমরা অনেক কিছুই জানতাম না, জানার সুযোগ হতো না।
এই পৃথিবীতে আমেরিকার অবস্থান কতটা শক্তিশালী, তা এই একটি মাত্রা নাড়াতে একটি সম্পূর্ণ গ্রহ কেঁপে উঠায় আমরা তা বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছি। যারা আমেরিকাকে খাটো করে দেখতে অভ্যস্ত, তাদের জন্যও এই নাড়াটি প্রয়োজনীয় ছিলো আমেরিকা’র সবচে আদরের বন্ধু রাস্ট্র হচ্ছে ইসরেল। সেই ইসরেল এর উপর আমেরিকা ’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপ করেছে ১৭%। চায়নার অগ্রযাত্রা থামাতে আমেরিকা ভারতকে ব্যবহার করছে; সেই ভারতের উপরও ’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপ করেছে ২৬%। এছাড়া চায়নার উপর তা ৩৪%, অপরদিকে আমেরিকার আরেক বন্ধু তাইওয়ান (চীনের শত্রু) এর উপর তা ৩২%! পাকিস্তানের উপর ২৯%। এবং আমাদের বাংলাদেশের উপর তা হচ্ছে ৩৭%।

কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে বৃটেন, ব্রাজিল, সিংগাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, চিলি এবং কলম্বিয়া’র উপর এই ’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপিত হয়েছে মাত্র ১০%! কারণ দেশগুলো আমেরিকান পণ্য প্রচুর পরিমানে আমদানী করে এবং আমেরিকান পণ্যে তারা ট্যাক্স অনেক কম চাপায়।

এই ’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’টি একটি দুর্দান্ত এবং স্মার্ট ক্যালকুলেশন। আমার ধারণা এটি ইলন মাস্কের মাথা থেকে বের হয়েছে। অবশ্য তা, স্বয়ং ট্রাম্পের মাথা থেকে বের হওয়াটাও অবাস্তব নয়। আমেরিকা পুরো পৃথিবী থেকে উৎপাদিত দুনিয়ার প্রায় সবকিছুরই একক এবং বৃহৎ আমদানীকারক।

আমি যেসব পণ্যগুলো নিয়মিত ব্যবহার করি তার বেশীরভাগ-ই আসে চায়না, শ্রী লংকা, উরুগুয়ে, মেক্সিকো, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েটন্যাম, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, কোরিয়া (আমি ইন্ডিয়ান পণ্য ব্যবহার করি না) ইত্যাদি দেশগুলোর উৎপাদিত।

এই পৃথিবীর সবচে বড় জ্বালানি তেল এর উৎপাদক হচ্ছে আমেরিকা। আবার একই সংগে এই পৃথিবীর সবচে বড় জ্বালানি তেল এর আমদানীকারকও কিন্তু এই আমেরিকা-ই। আমেরিকার অর্থনীতি বোঝা খুব সহজ কোন বিষয় নয়। মাত্র ৩৪ কোটি মানুষের এই দেশটির অর্থনীতি এককভাবে এই পৃথিবীর টোটাল অর্থনীতির প্রায় ২৫%! যেখানে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষের দেশ চায়নার অর্থনীতি হচ্ছে মোটে ১৫%; আর ১৫০ কোটি মানুষের অপর দেশ ভারতের অর্থনীতি হচ্ছে মাত্র পৌনে ৩%!

সামান্য ২.৮৬% সাইজের বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে ইন্ডিয়ার সে কি আকডুম-বাকডুম! সে কি দেমাগ! মনে হয় যেন ইন্ডিয়া-ই দুনিয়া চালাচ্ছে! অথচ ইন্ডিয়া হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ভাগাড়! না খেতে পারা মানুষের দেশ! বাদ দিন ওদের কথা!

যা বলছিলাম, সেই ’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নিয়েই আলোচনা করি।

’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপিত হবার পর বিশ্ব অর্থনীতি উলট-পালট হয়ে গেছে। কাউকে কাউকে দেখলাম হিসেব কষে দেখাচ্ছে এর ফলে আমেরিকার অর্থনীতি নাকি ১১ ট্রিলিয়ন ডলার হারিয়েছে ইতিমধ্যেই; তারা শিগগিরই ফুতুর হয়ে যাচ্ছে! ইত্যাদি।

তার মানে, আমেরিকা এতোটাই বোকা একটি দেশ যে জেনে বুঝে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছে!

মনে পরে গত বছর ‘সময় টিভি’ আর ’৭১ টিভি’ প্রতিদিন পালা করে সকাল-বিকেল প্রচার করতো আমেরিকা দেওলিয়া হয়ে গেছে, আমেরিকা শেষ। কোলকাতার দুস্ট বালক ময়ুখ সময় টিভিতে থাকলে বলতো, ’আমেরিকা আর থাকবেন, আমেরিকা আর থাকবে না!’

নাহ, সময় বা ৭১ টিভিওয়ালারা আমেরিকার অর্থনীতি বুঝতে অক্ষম বালক মাত্র। এরা না বুঝে রাজনীতি, না বুঝে অর্থনীতি। ব্যাঙ এর মতো শুধুই লাফায়।

দেখুন কোভিড-১৯ এ আমেরিকা তার অর্থনীতির প্রায় ১৬ ট্রিলিয়ন ডলার লস করেছে। ইয়েছ, সিক্সটিন ট্রিলিয়ন ডলার। ১০০০ বিলিয়নে এক ট্রিলিয়ন হয়।

তাহলে কোভিডের পর ১৬ ট্রিলিয়ন ডলার হারানো আমেরিকার মানুষ কি না খেয়ে সব মরে গিয়েছিলো?

না রে ভাই, আমরা এখনও মরে যাইনি। বেঁচে আছি তো!

কোভিডের পর আমেরিকার নিত্য-প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছুর মূল্যই দ্বিগুন হয়ে গেছে। কিন্তু কেউ মারা যায়নি। সত্যি কথা বলতে, এই দ্বিগুন হয়ে যাওয়ায় আমাদের গায়ে কোন ফুলের আঁচরও লাগে নি।

কেন লাগেনি?
কারণটাও খুবই সাধারণ।

একজন আমেরিকানের গড় আয় ’এতোটাই বেশী’ যে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম দ্বিগুন কেন, এক লাফে ৫ গুন বাড়লেও তাদের এতে কিছুই যাবে-আসবে না।

আর এবার আমেরিকার অর্থনীতি পরিচালনা করছেন বিশ্বের সবচে ধুর্ত দুইজন ব্যবসায়ী এবং ধনকুবের; এদের একজন ইলন মাস্ক এবং অপরজন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পকে বাদ দিন, ইলন মাস্কের হিসাব কখনওই মুখ থুবড়ে পরবে না, পরতে পারে না।

যাই হোক, আসল কথায় ফিরি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে ক্যালকুলেশনটা করেছেন তা হচ্ছে কোন দেশ আমেরিকা থেকে কি পরিমান পণ্য ক্রয় (আমদানী) করে এবং আমেরিকান পণ্যে তারা কত শতাংশ আমদানী শুল্ক আরোপ করে - তার উপর ভিত্তি করে বিপরীত মূখী পণ্য আমদানী (সে দেশের রপ্তানী) শুল্ক (ট্যারিফ) নির্ধারণ করা।

অর্থাৎ কাটা দিয়ে কাটা তোলা।

সেই হিসাব করেই সারাবিশ্বের দেশগুলোর উপর ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। আর সেই ট্যারিফের জালে আটকে গেছে পুরো পৃথিবী।

তুমি আমেরিকান পণ্যে বড় ট্যারিফ বসাবে, এমনকি আমেরিকা থেকে মালামাল কিনবে না; কিন্তু তোমার পণ্য বিনাশুল্কে আমেরিকায় দেদারছে বিক্রি করবে?

এটা কি মগের মুল্লুক নাকি হে!

এতোকাল আমেরিকা এটা দেখেও না দেখার ভান করেছে, কিন্তু দিন বদলেছে এখন! ট্রাম্পের মতো মহাধুরন্ধর এক ব্যক্তি এখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট!

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন!

সহজ সরল কথা হচ্ছে আমেরিকার কি এমন দায় পরেছে যে, সব দেশ তাদের পণ্যে (আমেরিকা থেকে আমদানীকৃত) চড়া শুল্ক নিবে কিন্তু আমেরিকা সব শুধু চুপচাপ দেখে যাবে, কিছুই বলবে না। এতোটা আশা করাটাও নিশ্চয় সুন্দর হয়নি!

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বের দেশগুলো যে হারে আমেরিকান পণ্যে ট্যারিফ বসায়, আমরাও যদি একই হারে (অর্থাৎ বিপরীতমূখি সমান-সমান ১০০% হারে) তাদের পণ্যে ট্যারিফ বসাই তাহলে বিশ্বের অনেক দেশ-ই মুখ থুবরে পরে যাবে; তারা যেন মুখ থুবরে না পরে সেজন্য ১০০% ট্যারিফ আরোপ না করে অর্ধেক হারে মাত্র ৫০% ট্যারিফ বসালাম।

অর্ধেক হারে বসানো (৫০%) ট্যারিফে-ই বিশ্ব আজ টালমাটাল, ১০০% বসালে কি হতো - চিন্তা করুন!

এখন আসল কথা হচ্ছে, কিভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরোপিত আমেরিকার এই রেসিপ্রোকাল ট্যারিফকে মোকাবেলা করা যাবে?

ইসরেল কি করছে?
আমেরিকার বন্ধু রাস্ট্র ইসরেল এতোকাল পর্যন্ত আমেরিকা থেকে আমদানীকৃত পণ্যে মাত্র ১% শুল্ক আরোপ করতো, সেটাও তারা এখন বাদ দিয়ে দিচ্ছে, আমদানী শুল্ক ০%-এ নিয়ে এসেছে। এবং মাত্র ৩ মাসের মাথায় ইসরেলী প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহু আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকায় যাচ্ছেন, কি করে কোন প্রক্রিয়ায় আমেরিকান পণ্য আমদানী বাড়িয়ে, এবং আমদানীতে কোন তরিকায় ভারসাম্য এনে এই বাড়তি ১৭% শুল্ক ছাড় পাওয়া যেতে পারে তা আলোচনা করতে।

বাংলাদেশের এখন কি করা উচিৎ!
বাংলাদেশের রপ্তানীর সবচে বড় এবং একক বাজার হচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকা বাংলাদেশ থেকে এককভাবে সবচে বেশী পণ্য আমদানী করছে।

প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানী হচ্ছে আমেরিকায়। ৩৭% রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ হলে গার্মেন্টস খাত সম্পূর্ণভাবেই মুখ থুবরে পরবে।

কি করা যায় তাহলে?
আমাদের বিশ্ব বরেণ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস স্যার কি ওয়াশিংটন ডিসিতে উড়ে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পায়ে ধরে বসে পরবেন?

নাহ, এতেও কোন লাভ হবে নাহ।
যা করতে হবে তা যেন বাস্তবসম্মত হয় - সেটা মাথায় রাখতে হবে।

চিন্তা করতে হবে, আমেরিকা ঠিক কি চায়!
এবং আমেরিকার সেই চাওয়াটাকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথভাবে আইন প্রণয়ণ করতে হবে।

আমেরিকা চায় বিদেশী রাস্ট্রগুলো তার দেশ থেকে অধিক পরিমানে পণ্য আমদানী করুক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে - প্রথমত, আমেরিকা থেকে কেনার মতো পণ্য হাতে গোনা; আর দ্বিতীয়ত আমেরিকান পণ্যের মান এবং দাম দু’টোই অনেক বেশী বিশ্ব বাজারের তুলনায়।

কিন্তু কিছু সুযোগ তো কিছু রয়েছেই।

বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কিছু মার্কিন পণ্য বিনা শুল্কে আমদানি করছে। সেগুলো হলো কটন বা সুতা, ভাঙা বা আস্ত সয়াবিন, তরলীকৃত বিউটেনাস, সমুদ্রগামী জাহাজ ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস।

এছাড়া রয়েছে ভোজ্য তেল।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ আমেরিকান ভোজ্য তেলের বড় ক্রেতা।

এই তেল ক্রয়ের পরিমান বৃদ্ধি করা খুবই সাধারণ বিষয়। বাংলাদেশ সরকার ‘আমেরিকান ভোজ্য তেল’ এর উপর আমদানী শুল্কে ছাড় দিতে পারে। এতে আমদানী অনেকগুন বেড়ে যাবে।

দুই। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস।
আমেরিকা থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানী উল্লেখযোগ্য পরিমানে বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে প্রচুর চাহিদা থাকায় এই গ্যাস আমাদানী আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তপোক্ত করতে পারে। চাহিদা মেটাতে পারে।

তিন। আমেরিকান তুলা।
আমেরিকান প্রিমা তুলা হচ্ছে এই গ্রহের সবচে উন্নত জাতের তুলা।

প্রিমা তুলার দাম অনেক বেশী; কিন্তু প্রিমা তুলায় তৈরী পণ্যের দামও অনেক গুন বেশী। আমার জানামতে, বাংলাদেশের অনেক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আমেরিকা থেকে অতি উচ্চমূল্যের প্রিমা তুলা আমদানী করে এবং সেই তুলার সুতায় তৈরী পোষাক অনেক চড়া দামে বিশ্ব বাজাবে রপ্তানীও করে থাকে। প্রিমা তুলা আমদানী বহুগুনে বাড়াতে পারে বাংলাদেশ এবং সেই তুলার তৈরী পোষাক রপ্তানী করে রপ্তানী আয় বহুগুন বাড়াতে পারে।

চার। আমেরিকান গাড়ী।
এসব কিছুর চেয়েও সবচে বেশী জরুরী হচ্ছে আমেরিকান গাড়ী আমাদানী বৃদ্ধি করা।

সেভি, ফোর্ড, জীপ এসব আমেরিকান গাড়ীর মূল্য কিন্তু খুবই কম। কিন্তু বাংলাদেশে এসব গাড়ী পৌছায় না। তার একমাত্র কারণ হচ্ছে গাড়ী আমদানীতে বাংলাদেশ আরোপিত অতিউচ্চ আমদানী শুল্ক। যে কারণে জাপানী টয়োটার পাশাপাশি বাংলাদেশে অতি নিম্নমানের ভারতীয় গাড়ী দিয়ে বাজার ভরে গেছে।

বাংলাদেশে ভারতীয় সস্তা পচা নিম্নমানের গাড়ীর উপরও যে আমদানী শুল্ক আরোপ করা রয়েছে অতি উচ্চমানের জাপানিজ গাড়ীর উপরও সেই একই হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। এটা সম্পূর্ণ অন্যায্য এবং ভুল চিন্তা-ভাবনা প্রসুত সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশের উচিত অতি নিম্নমানের ও সস্তা ভারতীয় গাড়ী আমদানী ‘সীমিত’ করে ফেলা। ভারতীয় গাড়ীর উপর ১০০০% ট্যাক্স আরোপ করা সময়ের দাবী। উল্টো দিকে (আমেরিকাকে খুশী করতে হলেও) আমেরিকান গাড়ীর উপর আমদানী শুল্ক কমিয়ে দিতে হবে এমনভাবে যেন বাংলাদেশে সস্তায় আমেরিকার নতুন গাড়ী কিনতে পারা যায়। এবং এটা বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত।

এছাড়া ইলেকট্রিক গাড়ী টেসলা (ইলন মাস্কের)‘র উপর আমদানী শুল্ক ‘জিরো’ করে দিতে বলবো, কারণ ইঞ্জিন-বিহীন ইলেকট্রিক গাড়ী পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং এটার জন্য কোন তেলের প্রয়োজন হয় না। টেসলা আমদানী করলে বাংলাদেশ নিজেই লাভবান হবে।

পে-পল’কে বাংলাদেশে সার্ভিস দেবার সুযোগ করে দিতে হবে।
বাংলাদেশে ‘পে-পল’ যেন ব্যবসা করতে পারে সেজন্য ড. ইউনুসের সরকারকে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

সেই সংগে এমাজন, গুগলসহ আমেরিকান অন্যান্য কোম্পানীগুলোকেও সুযোগ সৃস্টি করে দিতে হবে যেন তারা বাংলাদেশের আইটি খাতকে সমৃদ্ধ করতে পারে।

এখানে অপ্রাসংগিক কিন্তু জরুরী একটি বিষয় বলি, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশে বিকাশ, নগদসহ অন্যান্য অনলাইন মানি ট্রান্সফার সার্ভিস সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং এর কোন কোথাও কোন ফি দিতে হয়ে না, বাংলাদেশ ব্যাতীত (তা না হলে গুগল পে বা এমাজন পে’কেও বাংলাদেশে সার্ভিসে আনতে হবে)।

ইলন মাস্কের স্টারলিংক ইন্টারনেট বাজারে আসছে শিগগিরই। বাংলাদেশে প্রায় অর্ধকোটি তরুন আমেরিকার আউটসোর্সিং কাজের সংগে জড়িত। তারা হিউজ এমাউন্টের আমেরিকান ডলার উপার্জন করছে বাংলাদেশে বসেই। যদি পে-পল বাংলাদেশে কাজ করতে পারে এবং স্টারলিংক তাদের ইন্টারনেট সেবা দেয়, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারে বাংলাদেশের তরুনদের রিমোট জবের সুযোগ হাজারগুন বৃদ্ধি পাবে।

তরুনরা তখন বিদেশ যাবার পরিবর্তে ঘরে বসে রিমোর্ট ওয়ার্কে আরও বেশী আগ্রহী হয়ে উঠবে। এদের জন্য সরকারকে উদ্যোগী হয়ে পর্যাপ্ত ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশী রিমোট ওয়ার্কারা পে-পলের অভাবে এবং ভালোমানের ইন্টারনেট না থাকায় ভালোভাবে সুযোগের সদব্যবহার করতে পারছে না। এসব আমেরিকান কোম্পানীগুলো বাংলাদেশে কাজ করতে পারলে, এর এদ্বারা আমেরিকা এবং বাংলাদেশ উভয়েই লাভবান হবে ব্যাপকভাবে।

আমেরিকার ’চাওয়া’টুকু আমার কাছে বাংলাদেশের জন্য আর্শীবাদ বটে। বাংলাদেশকে এই ‘সুযোগ’টুকু কাজে লাগিয়ে ’রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ এর ফাঁদ থেকে বের করে আনতে হবে।

আর এই রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ থেকে বের হতে পারলে বাংলাদেশ খুব সহজেই গার্মেন্টস রপ্তানী আগের চেয়েও বহুগুন বাড়িয়ে দিতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস।

সেই সংগে দ্রুতই বদলে যেতে থাকবে বাংলাদেশও!



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com