শিরোনাম |
চৈত্রের গরমে সজীব থাকার উপায়
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() চৈত্রের গরমে সজীব থাকার উপায় পানি জাতীয় খাবার বেশী খান শরীরে পানির প্রয়োজন হয় সারা বছরই এবং গরমে এর প্রয়োজনটা অনেক বেশি কারন এ সময়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে আমাদের শরীর থেকে ক্রমাগত পানি বের হয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এক গ্লাস পানি খাওয়ার চাইতে যদি আমরা এমন একটি ফল খাই যাতে পানির পরিমাণটা সমান, তবে সেটা থেকে শরীরে বেশি পরিমানে পানি সরবরাহ হয়। এই অভ্যাসটি তাদের জন্য বেশি কার্যকরী যারা কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে চান, কারন পানিপূর্ণ খাবার খেলে ক্ষুধা মিটে যায় এবং পানির প্রয়োজন পূরণ হয়, কিন্তু এসব খাবারে ক্যালরি খুব একটা বেশি থাকে না। তাই বলে এই নয় যে আপনি গরমে পানি খাওয়া বাদ দিয়ে দেবেন। দিনে কমপক্ষে ৭/৮ গ্লাস পানি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি এবং এর পাশাপাশি বাড়িয়ে দিন ফল খাওয়া। প্রকৃতির নিয়ম এমনই যে, যে কোনো মৌসুমে আমাদের শরীরের জন্য দরকারি উপাদানগুলো পাওয়া যায় সই মৌসুমের ফল ও শাকসবজি থেকে। এমন অনেক ফল এখন পাওয়া যায় যার বেশির ভাগই পানি। এসব ফল শুধু পানির অভাবই মেটায় না বরং শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো বের করে দেয় এবং পুষ্টি উপাদানগুলোকে পৌঁছে দেয় সারা শরীরে। এসব মৌসুমি ফল হতে পারে এ গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার। পেঁপে চৈত্রের এ গরমে একাধিক বার গোসল করা বা মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দেয়া হোক, একটা ক্লান্তির চাপ চেহারায় থেকেই যায়। যাকে দূর করা যায় না। যতই মেকআপ করা হোক না কেন। এর সমাধান হয়ে ওঠতে পারে পেঁপে। পেঁপের আছে ভিটামিন ই এবং কিছু এনজাইম যা ত্বকের সতেজ ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং এই গরমেও আপনার চেহারায় আনে উজ্জ্বলতা। ডালিম এই গরমে জিমে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন? ভাবছেন শরীর বেশি ক্লান্ত হয়ে যাবে? এক গ্লাস ডালিমের জুস খেয়ে নিন এবং নিশ্চিন্তে রওয়ানা হয় যান জিমের দিকে, কারন ডালিমে আছে এমন উপাদান যা ভারী ব্যায়ামের পর পেশী পুনর্গঠনে সাহায্য করে। তাই এনার্জি ড্রিংক খাওয়া বাদ দিন এবং ডালিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। শশা ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ঈড়ষফ ধং ধ পঁপঁসনবৎ. এবং এটি বলার যথেষ্ট ভাল কারন রয়েছে। শসার ৯৬ ভাগই পানি। অন্যান্য ফল ও সব্জির মত এতে অনেক অনেক ভিটামিন না থাকলেও আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে এর চাহিদা পূর্ণ করতে পারে এই বহুল প্রচলিত খাবারটি। আপনার প্রতিদিনের সালাদে রাখুন অনেকখানি শসা। গরমে প্রাণ জুড়াতে শসা এবং পুদিনা পাতার শরবত খেতে পারেন। ডাবের ডাব ডাবের পানির পুষ্টিগুণ যে কোন এনার্জি ড্রিংক এর চাইতে কম নয় বরং অনেক গুন বেশি এবং এটি ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল মুক্ত। এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমানে পটাসিয়াম যা গরম কমানোর অন্যতম একটি উপাদান। দিনে একটি করে ডাবের পানি কাজ করতে পারে স্যালাইন এর বিকল্প হিসেবে। এর থেকে ক্যালরি পাওয়া যায় কম তাই ডায়েট কোলা বাদ দিয়ে নিশ্চিন্তে খেতে পারেন ডাবের পানি। অউঠঊজঞওঝঊগঊঘঞ তরমুজ আমরা সবাই গরমে তরমুজ খেতে ভালোবাসি। এটি শুধু মজাদারই নয় বরং এতে য়েছে প্রচুর পরিমানে পানি। তরমুজে ৯২ শতাংশ পানি থাকার পাশাপাশি রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং সোডিয়াম এর অনন্য সমাহার, যা শরীর থকে বের হয়ে যাওয়া চিনি এবং লবণের অভাব পূরণ করে। আম আমাদের প্রিয় ফল আম গরম কমিয়ে আনতে পারে অনেক গুন। শুধু পাকা আমই নয়, কাঁচা আমেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কাঁচা- পাকা দুই রকমের আমেই রয়েছে অনেক পরিমানে পেকটিন এবং লবণ এবং জিরা গুঁড়ো দিয়ে কাঁচা আমের ভর্তা হিট স্ট্রোক এবং ক্লান্তি দূও করতে সাহায্য করে। লিচু খুব কম সময়ের জন্য বাজারে থাকা এই ফলটিতে রয়েছে গরম কমিয়ে আনার শক্তি। গবেষণায় প্রমান হয়েছে যে লিচু কমিয়ে আনতে পারে হিট স্ট্রোকের মাত্রা ৫০ ভাগ পর্যন্ত। মশলাদার খাবার খান মশলাদার খাবার খেলে গরমে কান দিয়ে ধোঁয়া বের হয়। অনেকের বেলায়ই তা ঘটে। কিন্তু এটাও সত্যি যে ঝাল/মশলা দেয়া খাবার খেলে শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়, বিশেষ করে ত্বকের নিচের রক্ত প্রবাহী জালিকাগুলোতে। এর ফলে শরীরের তাপমাত্রা সমানভাবে বণ্টন হয়। এছাড়া মশলার প্রভাব একটু কমে এলেই মনে হয় তাপমাত্রা অনেক কমে গেছে। খাবারে এমন কিছু মশলা/ফ্লেভার যোগ করতে পারেন যেগুলোর আছে শরীর ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা যেমন এলাচি এবং পুদিনা পাতা। এড়িয়ে চলবেন যেসব খাবার আইসক্রিম ও বরফ ঠান্ডা ড্রিংকস খেতে যতই ভাল লাগুক না কেন, এগুলো আসলে আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমায় না বরং এসব খাবার হজম হতে শুরু করলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া শুরু করে। ফ্রিজের ঠান্ডা পানির বদলে রুম টেম্পারেচার এর খাদ্য/পানীয় বেছে নিন। আইসক্রিম এর বদলে খেতে পারেন মিষ্টি বা টকদই। আইসড কফির বদলে খেতে পারেন হারবাল টি। কমিয়ে দিন মাংস এবং চর্বি/তেল খাওয়ার পরিমাণ। ডুবো তেলে ভাজা এবং উচ্চ তাপে রান্না করা বাদ দিয়ে কম আঁচে রান্না করা এবং সেদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। বাড়িয়ে দিন কাঁচা ফল এবং সবজি খাওয়ার পরিমাণ। প্রতি বেলার খাবার ঠিক রাখুন যারা ডায়েটিং করেন কিংবা ব্যস্ততার কারণে খাবার বাদ দেন তারা গরমের সময় এই কাজটি ভুলেও করতে যাবেন না। এতে করে অসুস্থ হয়ে পরার সম্ভাবনাই বেশি। এই সময় ভালো, পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যকর এবং পানি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অনেক বেশি জরুরি শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য। প্রতিদিন পরিমিত ঘুমাবেন, দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলবেন। পেটের অসুখ যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুণ। নিজের প্রতি আস্তা রাখুন, সব সময় পজেটিভ ধারণা পোষণ করুন। আপনার সকল চাওয়া পাওয়ার জন্য স্রষ্টার সাহায্য প্রার্থনা করুন। জীবনের সব ক্ষেত্রে বিধাতার নিয়ম-নীতি মেনে চললে আপনার সুখ, সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। |