শিরোনাম |
ইসরাইলে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা, নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তে তীব্র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() ইসরাইলে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা, নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তে তীব্র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এই ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৫, যখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শিন বেতের প্রধান রোনেন বারের বরখাস্তের ঘোষণা দেন। নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরোধিতার ঝড় উঠেছে। সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে বিরোধী দল ও সাধারণ জনগণ, ফলে দেশটির পরিস্থিতি আরও বিপদজনক হয়ে উঠেছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপের কারণে আইনবিদ, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং অন্যান্য সংগঠনরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্ট ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে, নেতানিয়াহু এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বারকে বহিষ্কার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে ইসরাইল বিজনেস ফোরাম (আবিএফ) হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, যদি সরকার আদালতের নিষেধাজ্ঞা না মানে, তাহলে তারা দেশের অর্থনীতি অচল করে দেবে। আরমোন বার-ডেভিড, যিনি ইসরাইলের শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান, বলেছেন যে, শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি ধর্মঘটের ডাক দেবেন। এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহারুন বারাক এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহুর সরকার ইসরাইলে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করছে। জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিভাজন দেখা দিয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বারাক আরও বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির অভ্যন্তরীণ শান্তি ও ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তিনি এই সংকটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করার সমালোচনা করেছেন। এই ঘটনাগুলোর পাশাপাশি, ইসরাইলে বিরোধী বিক্ষোভও চলছে। বুধবার জেরুজালেমে এক বিক্ষোভের সময় একজন গাড়িচালক বিক্ষোভকারীকে ধাক্কা দিয়ে আহত করেছে, যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটায়। আহারুন বারাক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এবং ভবিষ্যতে রক্তপাতের ঘটনা ঘটতে পারে। নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত এবং তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের মধ্যে, তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছেন, æকোনো গৃহযুদ্ধ হবে না।” তিনি বলেছেন যে, সরকারই সিদ্ধান্ত নেয় কে শিন বেতের প্রধান হবে এবং তার বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তবে সমালোচকরা দাবি করছেন যে, নেতানিয়াহু এই পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষমতা আরও কেন্দ্রীভূত করতে চান এবং তার সহযোগীদের দুর্নীতির তদন্ত বন্ধ করতে চাচ্ছেন। এই সব ঘটনার মধ্যে ইসরাইলের সাধারণ জনগণ ব্যাপকভাবে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে। তারা বলছে, নেতানিয়াহু এখন স্বৈরশাসকে পরিণত হয়েছেন এবং বিরোধী মত দমন করতে তিনি রোনেন বারকে বরখাস্ত করছেন। এদিকে, গাজা যুদ্ধের মাঝেই ইসরাইলে এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা যুদ্ধ পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আরও ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরাইল |