বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:০২:২৭ এএম
শিরোনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬৭টি কার্তুজসহ দুই গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার        বাঁশজানি সীমান্ত থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা সরাল বিএসএফ       দেশের সব আয়নাঘর খুঁজে বের করা হবে : প্রেস সচিব       জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২,৮০০ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি       তিস্তা ইস্যুতে এবার মাঠে নামছে বিএনপি       এস আলম পরিবারের ৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ       বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি বিশ্বব্যাংকের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত      
ফ্যাসিস্ট হাসিনা-রেহানাদের ৪ আলিশান বাগানবাড়ি সন্ধান
নিজস্ব প্রতিবেদক :
Published : Tuesday, 4 February, 2025
ফ্যাসিস্ট হাসিনা-রেহানাদের ৪ আলিশান বাগানবাড়ি সন্ধান

ফ্যাসিস্ট হাসিনা-রেহানাদের ৪ আলিশান বাগানবাড়ি সন্ধান

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানা। এই দুই বোনের পরিবারের সদস্যরা বিদেশে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের কী কী সম্পদ আছে, তা খোঁজ করছে। সংস্থাটি তথ্য চেয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছে।

তাদের সম্পদের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়,শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের অধীনে গাজীপুরে রয়েছে ৪টি বাগানবাড়ি, যেগুলোর মধ্যে কিছু পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এ বাগানবাড়িগুলোর একটিতে গত ৫ আগস্ট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।

বাগানবাড়িগুলোর মধ্যে একটি হল ‘টিউলিপ’স টেরিটরি’, যা গাজীপুরের কানাইয়ায় অবস্থিত। এটি শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিকের মালিকানাধীন। প্রায় ৮ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই বাগানবাড়িটি গ্রামীণ পরিবেশে সজ্জিত, যেখানে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি, শানবাঁধানো ঘাট ও পুকুর রয়েছে। বাড়িটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এবং সেখানে ভাঙচুরের চিহ্ন দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর একটি দল বাগানবাড়িটিতে হামলা চালায় এবং ধ্বংস করে ফেলে।

শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিকের মালিকানাধীন এই বাগানবাড়ি ছাড়াও গাজীপুরে আরও তিনটি বাগানবাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে। সেগুলোর মধ্যে একটি ‘তেলিরচালা’ এলাকায়, আরেকটি ‘ফাওকাল’ এলাকায় এবং একটি ‘বাঙ্গালগাছ’ এলাকায়। স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ের নথি অনুযায়ী, এই বাড়িগুলোর জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ বিঘা, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, জমির পরিমাণ আরও বেশি।

বাগানবাড়ি গুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো ‘তেলিরচালা’ বাগানবাড়ি। এটি শিল্পাঞ্চলীয় এলাকাতে অবস্থিত এবং এখানে একটি ডুপ্লেক্স ভবন, সুইমিংপুল, পুকুর ও খোলা জায়গা রয়েছে। ৫ আগস্ট এখানে ও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল এবং বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে।

এছাড়া ‘ফাওকাল’ বাগানবাড়ি, যেখানে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং বিশাল পুকুর রয়েছে, তাতেও ভাঙচুরের চিহ্ন রয়েছে। বাগানবাড়িটির মালিকের নাম তারিক আহমেদ সিদ্দিক, যিনি শেখ রেহানার দেবর।

আরেকটি বাগানবাড়ি ‘বাঙ্গালগাছ’ এলাকার ‘বাগানবিলাস’। এটি কিছুটা ভিন্ন, এখানে শত শত গাছ লাগানো এবং একটি পুকুর রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানে অনেক বছর ধরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তবে ৫ আগস্ট এখানে ভাঙচুরের পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। সংস্থা ইতোমধ্যে গাজীপুর জেলা প্রশাসনকে জমির তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এবং প্রতিবেদন সংগ্রহের কাজ চলছে।

শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বেশির ভাগের নামে ৫ আগস্টের পর হত্যা মামলা হয়েছে। দুদক তাঁদের দুর্নীতির অনুসন্ধান করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলাও হয়েছে।

দুদক গত ১৭ ডিসেম্বর ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থাটি তথ্য গোপন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচলে ৬০ বিঘা আয়তনের ৬টি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তাঁদের পরিবারের ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুটি মামলা করে। তিন বিমানবন্দরে চার প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গত ২৭ জানুয়ারি চারটি মামলা করেছে দুদক।

দুর্নীতি প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কেউ কেউ পৈতৃক সূত্রে ও লিখে দেওয়া সূত্রে জমি পেয়েছেন। শেখ হাসিনা হলফনামায় জমি দেখিয়েছেন। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পদ সংগ্রহের বিষয়ে আরও তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।

এই চারটি বাগানবাড়ি এবং সম্পত্তি সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশন বিস্তারিত তদন্ত করছে এবং কিছু মামলার ক্ষেত্রেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। (তথ্যসূত্রে: প্রথম আলো)


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com