রোববার ৩ নভেম্বর ২০২৪ ০২:১১:০১ এএম
শিরোনাম সাইফুদ্দিনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ       কোমর দোলাতে ছোট ব্লাউজ, নোরার প্রশ্ন নাচব কিভাবে       দাঁতভাঙা জবাব পাবে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র : খামেনি       গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে বার্ষিক ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয় : টিআইবি       ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ১০ জনের        পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকার আইন, বিচার ও প্রশাসন বিভাগকে একাকার করেছিল: রিজভী       আমরা প্রতিহিংসা নয়, সহনশীল ও সম্প্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি : নোয়াখালীতে নুরুল হক নূর      
ঢামেক হাসপাতাল মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির অর্থ আত্মসাৎ ও ব্যাপক অনিয়ম
স্টাফ রিপোর্টার
Published : Saturday, 5 October, 2024
ঢামেক হাসপাতাল মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির অর্থ আত্মসাৎ ও ব্যাপক অনিয়ম

ঢামেক হাসপাতাল মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির অর্থ আত্মসাৎ ও ব্যাপক অনিয়ম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রোড সাইড মার্কেটে ১৩৭টি দোকান রয়েছে। প্রতি দোকান থেকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করছেন দোকান মালিকদের নিয়ে তৈরি করা ‘সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে একটি সমিতি। বাণিজ্যিক এলাকায় বিদ্যুৎ বিলের ইউনিট ১২ টাকা হলেও এখানে প্রতি ইউনিটের মূল্য নেওয়া হচ্ছে ২২ টাকা। তারপরও এ দোকানগুলোর কাছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। এভাবে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে গত ছয় বছরে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সততা ব্যবসায়ী সমিতির দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী দোকানের মালিকরা।

 #১২ টাকা ইউনিটের বিদ্যুৎ  বিল নেওয়া হয় ২২ টাকা
#পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপিতে লিখিত অভিযোগ 
#৬ বছরে আত্মসাৎ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা
#ডিপিডিসির বিল বকেয়া ২০ লাখ

দোকানের সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিলসহ যাবতীয় দোকান ভিত্তিক পর্যালোচনায় সব খরচসুমহ দেখভাল করার জন্য ২০১৯ সালে সততা ব্যবসায়ী সমিতির দায়িত্ব দেওয়া হয় মো. কবির হোসেন মনাকে। কিন্তু সেই দায়িত্ব পালন না করে দোকান মালিকদের বোঝা হয়ে ওঠেন তিনি। বিভিন্ন সময় ভাউচার বিল তৈরি করে টাকা উত্তোলন, টয়লেটের স্থানে দোকান তৈরি করে ভাড়া আদায় এবং উন্নয়নের নামে টাকা আদায় করলেও কোনো উন্নয়ন কাজ করেনি সমিতি। এভাবে এই সমিতি গত ছয় বছরে দোকান থেকে উত্তোলিত ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করছে দোকান মালিকরা।

দোকান মালিকরা ডিএমপি ও পুলিশ সদর দপ্তরে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক করিম হোসেন মনা, সহ-সভাপতি আমির হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিরু মিয়া, ক্যাশিয়ার সোহেল দ্বীন মোহাম্মদের যোগসাজশে সমিতির কার্যালয় অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন। মার্কেটের উন্নয়নের জন্য পাঁচটি দোকান বরাদ্দ থাকলেও, ওই দোকানের ভাড়া নিজেদের স্বার্থে ভোগ করছেন। এছাড়া, মার্কেটের টয়লেট সংস্কারের কথা থাকলেও টয়লেটের জায়গায় দোকান তৈরি করে সেই ভাড়াও তারা ভোগ করছেন।

মার্কেটের বিদ্যুৎ বিল প্রতি ইউনিট ১২ টাকা হলেও ২২ টাকা করে প্রতি ইউনিট ধার্য করা হয়েছে। এভাবে গত ছয় বছরে সমিতির তথাকথিত কর্মকর্তারা ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়াও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ডিপিডিসির বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে এই মার্কেটে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ২৪ লাখ টাকা।  অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দোকান মালিকরা সমিতির কাছে হিসাব চাইলে কোনো প্রকার হিসাব না দিয়ে, উল্টো বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেন সাধারণ সম্পাদক মনা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মনার তিন ছেলে রয়েছে, এবং তাদের প্রত্যেকের আলাদা সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। সেই বাহিনীর মাধ্যমে তারা মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন মনা দৈনিক গণকন্ঠকে বলেন, ২০১৯ সালে আমাকে এই মার্কেটের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা প্রতি ইউনিট ২৫ টাকা করে নিতেন এবং ১৫ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছেন। এখন যে টাকা বকেয়া রয়েছে, তা ধীরে ধীরে পরিশোধ করা হচ্ছে। ব্যবসায়িক বিদ্যুৎ বিল এমনভাবেই দেওয়া হয়। আর বাকি যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট।

সরেজমিনে মার্কেট এলাকায় দেখা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কেন্দ্রীক হওয়ায় এখানে বেশির ভাগ দোকানই মেডিসিনের। এছাড়াও রোগীর আসবাবপত্র ও মোটরসাইকেল পার্টসের দোকান রয়েছে। এখানে দোকান মালিক সমিতি থাকলেও তেমন কোনো সেবা পান না দোকান মালিকরা। বেশির ভাগ দোকান মালিকদের অভিযোগ সমিতির লোকজনের বিরুদ্ধে, তারা টাকা নিয়ে বিদ্যুৎ বিল দেন না এবং বিল বকেয়া রাখেন।

১২৪ নম্বর দোকান কুমিল্লা মেডিকেল হলের মালিক সুমন সরকার বলেন, মার্কেটের সবকিছু ঠিক আছে, কিন্তু মালিক সমিতির কাজ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তারা প্রতি মাসে টাকা নেয়, কিন্তু দোকানের কোনো কাজ করেন না। বিদ্যুৎ বিল যা আসে, তার চেয়ে বেশি টাকা দিতে হয়, তবুও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখেন সমিতির লোকজন। যে সমিতির মাধ্যমে আমাদের ক্ষতি হয়, সেই সমিতি আমাদের জন্য কী প্রয়োজন তা আমার জানা নেই।

এমন অভিযোগ মার্কেটের প্রায় সব দোকান মালিকদের। ৬৯ জন দোকান মালিকের স্বাক্ষর করা একটি লিখিত অভিযোগে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ডিপিডিসির নিয়ম অনুসারে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার শেষ তারিখের পরে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়। এরপরেও যদি বিল বকেয়া থাকে, তাহলে বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই মার্কেটের মালিক সমিতির যোগসাজশে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখা হয়েছে। ডিপিডিসির রমনা আঞ্চলিক অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. বসির আহম্মেদ বলেন, এই মার্কেটের বিদ্যুৎ বিল বাবদ কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। প্রতি মাসেই কিছু কিছু বকেয়া টাকা দিচ্ছেন মালিক সমিতির লোকজন। ব্যবসায়িক এলাকা হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন কাটা হয়নি। তারা ধীরে ধীরে বকেয়া পরিশোধ করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com