শিরোনাম |
হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
|
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শনিবার দাবি করেছে, শুক্রবার বৈরুতে এক হামলায় হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে হিজবুল্লাহ কোনো মন্তব্য করেনি। আইডিএফ দাবি করছে, হাসান নাসরাল্লাহকে টার্গেট করে সে হামলা চালানো হয়েছিল। এই হামলায় হাসান নাসরাল্লাহর সঙ্গে হিজবুল্লাহর সাউদার্ন ফ্রন্ট কমান্ডারও নিহত হয়েছেন। তারা এক্স প্ল্যাটফরমে লিখেছে, হাসান নাসরাল্লাহ পৃথিবীতে আর আতঙ্ক ছড়াতে পারবেন না। আইডিএফের চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘এখানে বার্তা খুব পরিষ্কার। ইসরায়েলি নাগরিকদের যারা হুমকি দেবে তাদের কিভাবে খুঁজে বের করতে হয়, সেটা আমরা জানি। সেটা উত্তরে, দক্ষিণে কিংবা আরো দূরে হলেও আমরা খুঁজে পাব। আইডিএফ বলছে, দক্ষিণ বৈরুতে হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতারা যখন বৈঠক করছিলেন তখন সেখানে হামলা চালানো হয়। দক্ষিণ বৈরুতের এ জায়গাটি হিজবুল্লাহর একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ইসরায়েলি বাহিনী বেশ কয়েক দিন যাবৎ লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েল দাবি করছে, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে কাবু করতে তাদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হচ্ছে। এদিকে হিজবুল্লাহকে ‘সর্বোচ্চ শক্তি’ দিয়ে আঘাত করার জন্য সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েল পুরোদমে হামলা শুরুর সপ্তাহখানেক আগে লেবাননে পেজার, ওয়াকিটকিসহ নানা ধরনের তারহীন যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দুটি আলাদা ঘটনায় হাজার হাজার পেজার ও রেডিও ডিভাইস বিস্ফোরিত হওয়ায় কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। ইরান এখন কী করবে? এদিকে হিজবুল্লাহ নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের একের পর হামলা মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি করছে। এর মাধ্যমে তাদের মূল পৃষ্ঠপোষক ইরানকে উসকে দেওয়া হচ্ছে বলে লিখেছেন বিবিসির নিরাপত্তাবিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাংক গার্ডনার। গার্ডনারের মতে, কিছুদিন ধরে ইসরায়েল আর হিজবুল্লাহর মধ্যে চলা যুদ্ধে অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকা রেখে আসছে ইরান। কিন্তু এখন তারা দেখতে পাচ্ছে, কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক তাদের মিত্রদের ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। ১৯৯২ সাল থেকে হিজবুল্লাহর প্রধান হিসেবে রয়েছেন হাসান নাসরাল্লাহ। অনুগত কমান্ডারদের মাধ্যমে তিনি একটি মিলিশিয়া বাহিনী থেকে হিজবুল্লাহকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বেসরকারি সামরিক বাহিনীতে পরিণত করেছেন। ইরানের রেভল্যুশনারি বাহিনীর সাহায্যে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে বিশাল অস্ত্রশস্ত্রের ভাণ্ডার রয়েছে, যার অধিকাংশই ভূগর্ভে লুকিয়ে রাখা আছে। কিন্তু হাসান নাসরাল্লাহসহ দলটির অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর সংগঠনটি সক্ষমতা ও নামডাক—সব দিক থেকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। এরপর অবশ্যই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ডাক উঠবে। তখন ইরান কী ভূমিকা নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।-বিবিসি |