শিরোনাম |
Extended Producer Responsibly (EPR) ও পরবর্তী করণীয় বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
মোঃ মাহমুদুর রহমান (মিলন)
|
![]() Extended Producer Responsibly (EPR) ও পরবর্তী করণীয় বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন সেন্টারের সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমাদের অবশ্যই EPR বাস্তবায়ন করা উচিত। উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, আমরা যখন বিদেশে যাই সেখানে কিন্তু আমরা যত্রতত্র চিপস এর প্যাকেট বা অন্যান্য বর্জ্য ফেলি না। ডাস্টবিন না থাকলে পকেটে ভরে রাখি পরে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেই। কিন্তু সেই মানুষটি আমরা নিজের দেশে এমনটি করি না। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বাস্তবায়নের জন্য আমাদের এমন ধরনের কিছু চ্যালেঞ্জ সমূহের সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে। সরকার কর্তৃক প্লাস্টিক দ্রব্যের সিঙ্গেল BDQ বন্ধের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি সেমিনারে উপস্থিত সচিব মহোদয়কে বলেন, এটা হবে একতরফা ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ বিগত সময়ে সরকার পলিথিন ব্যাগের বন্ধের ঘোষণা করেন। সেটা কিন্তু এখনো পুরোপুরি সফল হয়নি। একটি পানি ও কোকের বোতল দেখিয়ে নমুনা স্বরূপ তিনি বলেন, প্লাস্টিকের সিঙ্গেল ইউজ বন্ধ করলে, এই ধরনের পণ্য কিসের মাধ্যমে সার্ব হবে? তখন দেখা যাবে প্লাস্টিকের সিঙ্গেল ইউজ বন্ধ আমাদের অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, জাপানে জন প্রতি ১৪০ কেজি ও সিঙ্গাপুর জন প্রতি ১৩০ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহার করেন। আমাদের দেশেও ২০৩০ সাল নাগাদ জনপ্রিয় প্রায় ৩৫ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহার করবে, যা এখন প্রায় ১২ কেজি জনপ্রতি ব্যবহার করছেন। তিনি আরো বলেন, আমি যেহেতু প্লাস্টিক সেক্টরের সভাপতি ছিলাম সেহেতু আমি নিজ উদ্যোগে নিজ অর্থায়নে দুটি গ্রীন প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি করেছি। যাতে আমার পথ ধরে অনেকে উৎসাহী ও উদ্যোগী হয়। এছাড়া তিনি বলেন, আমরা জানি কাঁচের ব্যবহার বায়ুমন্ডলে খারাপ প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ কাঁচ উৎপাদনে ও পুনঃ উৎপাদনে চার বার কার্বন গ্যাস নিসঃরণ করে। তিনি বলেন, এ সকল কারণে RRR এর বিকল্প নেই RRR হলো Reduce, Recycling ও Re-use । তিনি বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর আগে জার্মানে গিয়েছিলাম তখন তারা EPR সমৃদ্ধ দেশ। তবে আশার কথা হলো, দেরিতে হলেও আমাদের দেশে অনেকে প্লাস্টিকের রিসাইক্লিং সফলতার সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিবেশ বান্ধব প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় তিনি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রির উপর ১৫% ভ্যাট যথা সম্ভব কমানোর অনুরোধ করেন। বক্তব্যের শেষে সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য তিনি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং এফবিসিসিআই ইনোভেশন এন্ড রিসার্চ সেন্টারে সকল ধরনের ব্যবসায়ীদের যাওয়ার আহ্বান জানান। ![]() Extended Producer Responsibly (EPR) ও পরবর্তী করণীয় বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশেষ অতিথি ব্রিটিশ হাই কমিশন এর ডেপুটি হাই কমিশনার এইচ. ই মাট ক্যানেল, এফবিসিসিআই ইনোভেশন এন্ড রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ বাবু ও ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এ মোমেন, বিপিজিএমইএ-এর সভাপতি শামীম আহমেদ, এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক আলমাস কবীর, প্রাণ আরএফএল, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, লাফার্জ হোলসিম সহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মামুন একটি Key note উপস্থাপন করেন। যেখানে অনেক হতাশা জনক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের ৩০% রিসাইক্লিং হয় বাকী ৭০% মিস ম্যানেজমেন্ট হয়। যার দীর্ঘ মেয়াদী বিরূপ প্রভাব পড়ে পরিবেশের উপর। যেমন- পলি ব্যাগের অস্তিত্ব টিকে থাকে ২০ বছর, স্ট্র’র অস্তিত্ব টিকে থাকে ২০০ বছর। অতএব এ দুটো বিষয় থেকে সহজে বোঝা যায় প্লাস্টিক বর্জ্য কিভাবে দীর্ঘ মেয়াদে পরিবেশকে ধ্বংস করতে পারে। অন্য একটি হতাশাজনক তথ্য হলো, নদীর নিচে ৩ থেকে পাঁচ মিটার প্লাস্টিক বর্জ্যের স্তর। আর এসবের জন্য দায়ী আমি আপনি আমরা। আপনি উৎপাদন করবেন, বিক্রি করবেন আর ভুলে যাবেন, এমনটা হওয়া ঠিক নয়। সচেতন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনার দায়িত্ববোধ থাকা উচিত, প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে রিসাইক্লিং করার বিষয়ে অবদান রাখা উচিত। আমাদের পাশ্ববর্তী ভারত EPR শুরু করছেন ২০১৫ সাল থেকে, ফিলিপাইন শুরু করেছে ২০২২ থেকে এবং কানাডা ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ৬৫% রিসাইক্লিং করবে। তার মানে ২০৩০ সালের মধ্যে কানাডা প্রায় ১০০% প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। উক্ত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক আলমাস কবীর, আক্কাস মাহমুদ, ফেরদৌসী বেগম রিনা এবং আলী জামান, মাহমুদুর রহমান, মোহাম্মদ পলাশ, কাওসার, চুন্নু, জাবেদ সহ আরো অনেক অতিথিবৃন্দ। |