সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০২:০৪:০৪ এএম
শিরোনাম নোয়াখালীর বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও ব্যবসায়ী কামাল আর নেই       জামায়াতকে ‘ধর্ম ব্যবসায়ী-প্রতারক’ আখ্যা বিএনপি নেতা বাচ্ছুর।       গণহত্যার বিচার ও মৌলিক সংস্কার ছাড়া জনগণ নির্বাচন চায় না : ড. মাসুদ        প্রধান উপদেষ্টা কাল কাতার যাচ্ছেন       রাষ্ট্রের দুই অঙ্গের সমমর্যাদায় বিচার বিভাগকে প্রতিষ্ঠিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে : প্রধান বিচারপতি       প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন       আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করলেন নুর      
ঢাকা উত্তরের অঘোষিত 'ডন' আ.লীগ নেতা আফসারের রাম রাজত্ব আজও বহাল!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
Published : Monday, 24 March, 2025
ঢাকা উত্তরের অঘোষিত 'ডন' আ.লীগ নেতা আফসারের রাম রাজত্ব আজও বহাল!

ঢাকা উত্তরের অঘোষিত 'ডন' আ.লীগ নেতা আফসারের রাম রাজত্ব আজও বহাল!

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালানো সাবেক কাউন্সিলর আফসার খানের বৈধ অবৈধ সকল ব্যবসা বাণিজ্য এখনো বহাল তবিয়তে চলছে।

উত্তরার 'ডন' নামে খ্যাত ডিএনসিসির ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর একাধিক ছাত্র হত্যা মামলার আসামি আফসার খান এখনো গ্রেফতার না হওয়ার জনমনে নানান প্রশ্ন উঠেছে।তারা বলছে কি কারণে কোন অদৃশ্য ইশারায় পলাতক এই খুনির ব্যবসা বাণিজ্য এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে প্রশাসনকে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।


একাধিক সূত্রে জানা যায়,ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য আফসার খানের পেটোয়া বাহিনীরা এখনো উত্তরায় চুরি ছিনতাই ও দখল বাণিজ্য সরব রয়েছে।


আফসারের নির্দেশে উত্তরার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পায়তারা চলছে। খুন ধর্ষন, চুরি ছিনতাই ও দখল বাণিজ্যের মাধ্যমে এ বাহিনী মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করে এখনো রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।


জানা যায়, ছাত্র হত্যার একাধিক মামলার আসামি আফসার উদ্দিন গা ডাকা দিলে ও এখনো তার ইশারায় চলছে উত্তরার দখলবানিজ্য। স্থানীয় লোকজন বলছেন, জুলাই-২৪ গণহত্যা মামলার আসামি আফসার বাহিনীকে ডেভিল হান্ট অভিযানের মাধ্যমে স্ব-মূলে নির্মূল করতে না পারলে ভালোবাসার বাংলাদেশ গঠনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ব্যাহত হবে ।

ডিএনসিসির ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খান তিনি ফ্যাসিস খুনি হাসিনার একজন দোসর । যার ফলে সে জুলাই-২৪ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার সন্ত্রাসীবাহিনী নেয়ে সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। সে সময় তার চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছে অনেকে।

খুনি হাসিনার দোসর আফসার খান বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত শহীদের পরিবারের লোকজন খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীদের নামে হত্যা মামলা রুজু করার পর পর গা-ঢাকা দিয়েছেন ডিএনসিসি ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আফসার উদ্দিন খান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগের পক্ষে পুরো উত্তরায় অবস্থান নিয়ে উত্তরা আজমপুর ও বিএনএস সেন্টার এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আ.লীগ নেতা আফসার খান আত্ম গোপনে থাকলেও এখানকার প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে চলছে তার বৈধ অবৈধ সকল ব্যবসা।

অনেকটা আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতো অবস্থা আফসার উদ্দিন খানের। গত ৮ বছরের একটু বেশি সময়ের ব্যবধানে শূন্য থেকে তিনি এখন হাজার কোটি টাকার মালিক।

সরকারী জমি দখল করে একাধিক মার্কেট, বাড়ি, ফিলিং স্টেশন, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, ক্যাসিনো ব্যবসা, কী নেই তার ।আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে রাজনৈতিক নেতা ও কাউন্সিলর হওয়ার বদৌলতে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উত্তরা ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খান গত কয়েক বছরের শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

রাজনৈতিক প্রভাব ও এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে ঢাকা-১৮ আসনের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে রয়েছে তার শতাধিক ক্যাডার বাহিনী।
৫ আগস্টের পর এদের অনেকই রাজনৈতিক ভোল পাল্টিয়ে এখনো তাদের দখল বাণিজ্য করে যাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রের দাবি— কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খান দখল-চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-ক্যাসিনো ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলো। রাজউকের ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্লটে মার্কেট বানানো, দখলবাজি, ফুটপাত ও পরিবহন চাঁদাবাজিসহ জুয়া ও ক্যাসিনো কারবার থেকে প্রতিমাসে এখনো মোটা অংকের চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে সাবেক আ.লীগ নেতা ও কাউন্সিলর আফসারের বিরুদ্ধে।

সূত্রে আরও জানায়, বৃহত্তর উত্তরার ফুটপাত দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ক্লাবে পরিচালিত জুয়া ও ক্যাসিনো কারবারে এখনো নিয়মিত ভাগ পান আফসার বাহিনী ।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা যায়, উত্তরা আজমপুরে বিডিয়ার বাজারে কাঁচাবাজার বসিয়ে প্রতি মাসে অর্ধ কোটি টাকা ভাড়া আদায় করতেন আফসার উদ্দিন বাহিনী।
তার পক্ষে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাহাবুদ্দিন বাজারটি দেখভাল করতেন। এছাড়াও আজমপুরে ব্যক্তি মালিকানাধীন ২০ কাঠার একটি প্লট দখল করে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রির মার্কেট নির্মাণ করেছেন এ চাঁদাবাজ কাউন্সিলর। এটি পরিচালনা করতেন শ্রমিক নেতা মাজেদ।

আব্দুল্লাহপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ছয়টি মার্কেট নির্মাণ করেন আফসার খান। এগুলো পরিচালনায় আছেন তার শ্যালক ও যুবলীগের কয়েকজনসহ স্থানীয় জামাই ফারুক। সোনারগাঁও জনপথ রোডে রাজউকের প্রায় ২০ বিঘা জমি দখল করে বানানো হয়েছে ফার্নিচার বাজার। সেটি পরিচালনা করেন চাঁদাবাজ জজ মিয়া ও যুবলীগের সোহেল। ৯ নং সেক্টরে লেক পাড়ের ফার্নিচার মার্কেট পরিচালনা করে তার আশীর্বাদ পুষ্ট স্থানীয় ছাত্রলীগ। উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের সামনে জুট কাপড়ের ব্যবসার মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করতেন তার অনুসারী রাসেল। ওই প্লটটি বিএনপির এমপিপ্রার্থী সৌদি প্রবাসী জামাল উদ্দিনের।

উত্তরা আব্দল্লাহপুরের পরিবহন চাঁদাবাজি, যা রাজধানীর মধ্যে তৃতীয় বড় পরিবহন চাঁদাবাজির স্পট। এটি নিয়ন্ত্রণ করতেন শ্রমিক নেতা গোপাল গঞ্জের নূরু। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকা উপার্জন করতেন কাউন্সিলর আফসার।
এসব অর্থে গত ১০ বছরের ব্যবধানে গড়েছেন তিনি অঢেল সম্পদ। এ সব অবৈধ সম্পদ ভোগ করে বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছেন।

উত্তরায় ১০ কাঠা জমির উপর গড়ে তুলেছেন তিনি ১৩ তলা ভবন, নাম দিয়েছেন খান টাওয়ার। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও ৯ নং সেক্টর এর ১০ নং রোডে পাঁচ কাঠার ও আবদুল্লাহপুরে দুটি ছয়তলা বাড়ি সহ তিনটি প্লট,যার বর্তমান মূল্য ১০০ কোটি টাকার ও বেশি। পরিবারের বিভিন্ন জনের নামে উত্তরায় আরো ১৫টি প্লট রয়েছে বলে জানা গেছে। তার রয়েছে আশুলিয়ায় একই সাথে প্রায় ৫০ বিঘা জমি ও একটি পেট্রোল পাম্প।

তিনি মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে আব্দুল্লাহপুরের খন্দকার সিএনজি স্টেশনটি ১০ কোটি টাকায় কিনেছেন বলে জানা গেছে। টঙ্গীর চেরাগআলীতে এক বিঘার উপর একটি নির্মাণাধীন মার্কেট রয়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় রয়েছে দুটি ফ্ল্যাট। পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় পরিবারের সবার সেকেন্ড হোম গড়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ২০০৮ সালে ক্ষমতালোভী আফসার ভোল পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। স্থানীয়রা জানান, ঢাকা-১৮ আসনের প্রয়াত আওয়ামী লীগ এমপি সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের ছত্রছায়ায় থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় স্বঘোষিত ডন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন আফসার খান।

স্থানীয়রা ছাত্র হত্যার একাধিক মামলার আসামি আফসার খান ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তার অবৈধ সম্পদ পাহাড়াদানকারীদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com