শুক্রবার ২৮ মার্চ ২০২৫ ১৫:০৩:৩৮ পিএম
শিরোনাম ঈদকে সামনে রেখে ফেনীতে যানযট নিরসনে যৌথ বাহিনীর অভিযান       ঈদের দিন যেমন থাকতে পারে আবহাওয়া       চাঁনখারপুলে গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে : চিফ প্রসিকিউটর       ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা আদালতের       ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র যুক্তরাষ্ট্রের হাতে       দু’এক দিনেই বাসায় ফিরছেন তামিম, নেয়া হবে বিদেশেও       গাজায় প্রতি ৪৫ মিনিটে একটি শিশুর প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে ইসরাইল      
ট্রাম্প হেরিকেন ধরিয়ে দিলো আওয়ামী লীগের হাতে, চেয়ে রইলো মোদি!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
Published : Sunday, 16 February, 2025
ট্রাম্প হেরিকেন ধরিয়ে দিলো আওয়ামী লীগের হাতে, চেয়ে রইলো মোদি!

ট্রাম্প হেরিকেন ধরিয়ে দিলো আওয়ামী লীগের হাতে, চেয়ে রইলো মোদি!

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। গত ১৬ বছরের শাসন আমলে সাবেক স্বৈরাচার হাসিনা ও তার দলের বিরুদ্ধে গুম খুন ও হত্যাযজ্ঞ চালানোর প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)-এর তথ্যানুসন্ধান দল।

জাতিসংঘ সম্প্রতি শেখ হাসিনা ও তার দলের গুমখুন নিয়ে যেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাতে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ। অন্যদিকে, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফেরার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এড়িয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে আশায় যে বুক বেঁধেছিল সেটাও বিফলে গেছে। মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশ ইস্যুটি নয়াদিল্লি গুরুত্বের সাথে তোলার চেষ্টা করলেও ট্রাম্প প্রসাশন যে তা গুরুত্ব সহকারে নেয়নি বা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে নারাজ তা এখন স্পষ্ট। ফলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের স্বাভাবিক-অস্বাভাবিক কোনো প্রক্রিয়ায় রাজনীতিতে আর ফিরে আসা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি আমরা আয়না ঘরের ভয়ঙ্কর চিত্র দেখলাম।‌একই দিনে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এটা স্পষ্ট যে, শেখ হাসিনা এবং তার দল গণহত্যায় জড়িত। এখন হচ্ছে বিচার করার পালা। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদির দৃষ্টিতে বাংলাদেশকে দেখতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। ফলে ট্রাম্প প্রশাসন হাসিনার পক্ষে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে বলে পলাতক স্বৈরাচারের যে আশা ছিল তা একেবারেই বৃথা প্রমাণিত হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, মোদির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেট জড়িত কিনা?- সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প‌। তিনি যে উত্তর দিয়েছিলেন তা ইঙ্গিত দেয়, নতুন ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক নাও গলাতে পারে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর তাদের অপরাধ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আওয়ামী লীগ দল হিসেবে তার বৈধতা হারিয়েছে। আর পুরো গণহত্যার মাস্টার মাইন্ড ওই দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। ফলে, দল বলেন আর শেখ হাসিনা বলেন, কারুরই আর রাজনীতিতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ নাই।

নেটিজেনরা বলছেন, শেখ হাসিনাসহ একাংশ দেশের বাইরে পালিয়েছে। যারা এখানে পালিয়ে আছে, তারাও বিভ্রান্তির মধ্যে আছে। শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে নানা বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে তাদের বিভ্রান্ত করছেন। তারা হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যাবে।

ফেসবুক ব্যবহারকারী মোঃ শামীম লিখেছেন, আপাতদৃষ্টিতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কি? বুঝতে হবে তুমি একটা দেশের ইয়ং জেনারেশনের উপর গণহত্যা চালিয়েছ।
তোমাদের কৃতকর্ম গুমখুন লুটপাট দেখে এই জেনারেশন বড় হয়েছে।তাই বেহুদা 'মোদিজি' 'মোদিজি' মাতম করে লাভ নেই।


আসাদুজ্জামান নূর জিসান লিখেছেন, আমি অনেকবার বলছি হাসিনা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ও শেষ মহিলা স্বৈরশাসক। আমেরিকা জানে ওরে সাপোর্ট করলে পৃথিবীতে গনতন্ত্র শব্দ টাই কলংকিত হবে ৃপুতিনের বন্ধু স্বৈরশাসক বাসাররে জায়গা দিছে কিন্তু কোন কথা বলতে দেয়না। অনেকে বলে গুম কইরা ফেলছেৃআওয়মীলিগ যদি শেখ পরিবারের নেতৃত্ব ছাড়া দল না গুছাইতো না পারে হাসিনা মারা যাওয়ার পর দল চরম নেতৃত্ব সংকটে পরব। একটা সময় মুসলিম লীগের মত ইতিহাস হইয়া যাবেৃ.। ছাত্রজনতা কোনদিন ফিরতে দিবনা। দিব যদি ওর উপরে কোন স্বৈরশাসক তৈরি হয় তাহলে আসার সুযোগ আছে।

ফারুক ভূঁইয়া লিখেছেন, জাতিসংঘের রিপোর্টের পর স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার রাজনৈতিক অধ্যায় শেষ হলো।..আজকের জাতিসংঘের রিপোর্টের পর যারা এই খুনি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষ নিয়ে কথা বলবে তারা কখনো দেশ প্রেমিক হতে পারে না অথবা দেশপ্রেমের সংজ্ঞা কি বুঝেনা।

শেখ মুজিবর রহমানের বাকশাললীগ পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের করুণায় গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হওয়া হাসিনার নেতৃত্বের আওয়ামী লীগের মৃত্যু ঘটলো ঘটলো। রাজনৈতিক মৃত্যুর জন্য স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা এবং তার উচ্চবিলাসী সাঙ্গপাঙ্গরা জড়িত এটির জন্য দেশের মানুষ কোন ভাবেই দোষী নয়।


যারা না বুঝে চিল্লাইতেছেন হাসিনা হাসিনা করে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে এখনো সময় আছে এই জায়গা থেকে সরে আসুন না হলে এই হাসিনার প্রতি যারা মায়া কান্না করতেছেন বিভিন্ন সময় উস্কানিমূলক পোস্ট দিতেছেন তাদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে হয়তো। সময় বলে দিবে আমার কথাটা সত্যতা কতটুকু।

নসিফা সূরা লিখেছেন, শেখ হাসিনা আর নেই। প্রফেসর ইউনুছের ব্যক্তিগত কারিশমার নমুনা দেখা গেলো জাতিসংঘের দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই নৃশংসতার রিপোর্টের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। এটা এখন পাবলিক ডকুমেন্ট। এর মধ্য দিয়ে হাসিনার রাজনীতি শেষ বলা যায়।

ইউনুছ হাসিনাকে যেভাবে হিটলারের মতো জাতিসংঘে রিপ্রেজেন্ট করেছে এটা আর কেউ পারেনি, কিংবা অন্যদের সেই লেভেলের ক্যাপাসিটিও নাই।জাতিসংঘের এই রিপোর্ট এখন হাসিনার শাসনের নৃশংসতার গ্লোবাল রেফারেন্স। জাতিসংঘের এই রিপোর্টকে ইগ্নোর করার কোন সুযোগ নেই।

হাসিনার সমর্থকদের এই রিয়েলিটি এখন মেনে নিতেই হবে- তার রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। ভারতের সহায়তায় শাস্তি এড়াতে পারলেও বিচার এড়ানোর সুযোগ নাই। আওয়ামী লীগের কি পরিমাণ ক্ষতি যে এর মাধ্যমে হবে সেটা ভবিষ্যত বলে দিবে। এমনকি নিষিদ্ধের দাবী জোরালো হতে পারে এই রিপোর্টের পর।

মোঃ ইসমাইল নামে একজন লিখেছেন, ‘মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে গণহত্যাকারী ও তাদের সমর্থকদের লাফালাফিতে ফেসবুক চালানোই দায় হয়ে পড়েছিল। ভাব দেখে মনে হচ্ছিল যেন মোদির আবদারে ট্রাম্প ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ক্ষমতায় এনে বসিয়ে দিবে। কিন্তু চরম হতাশ করে আওয়ামী লীগের হাতে হেরিকেন....দিল ট্রাম্প। অন্যদিকে অসহায় দৃষ্টিতে চেয়ে দেখা ছাড়া উপায় রইলো না মোদির!’

এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর শেখ হাসিনা এখন আন্তর্জাতিভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী। তার দল আওয়ামী লীগও সন্ত্রাসী দল। গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশ, প্রশাসন ও তার দলকে ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে। শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। আর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ রাখতে হবে।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, ‘আয়না ঘরের ভয়ঙ্কর চিত্র তো আমরা দেখলাম। একই দিনে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এটা স্পষ্ট যে, শেখ হাসিনা এবং তার দল গণহত্যায় জড়িত। আমরা শুধু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নয়, আওয়ামী লীগের বিচারও চাই। সেজন্য যদি আইনের কোনো সংশোধন দরকার হয়, সকারকে তা করতে হবে। আর শুধু শেখ হাসিনা নয়, যারা যারা গণহত্যায় জড়িত, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসার চেয়েও জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর আমি ভাবছি কোন মুখে আওয়ামী লীগ বা তাদের নেত্রী রাজনীতিতে ফিরে আসার চিন্তা করতে পারে। তাদের তো এখন লজ্জায় মুখ ঢাকার কথা। এখন জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর তাদের অপরাধ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এরপর তাদের আর রাজনীতি করার অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না।’



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com